ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বা Risk Management কি?

কোন বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষতির অর্থনৈতিক প্রভাব নিরূপণ করে সেই অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো বা সম্ভাব্য ক্ষতির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়াই হল Risk Management বা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা। Diversification বা বিনিয়োগের বৈচিত্রতা একটি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল যা একটি পোর্টফোলিওতে বিভিন্ন ধরণের বিনিয়োগের সংমিশ্রন করে।

বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজারের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত থেকেও অধিক লাভের আশায় শেয়ার বাজারে আসেন। কিন্তু বাজারে বিনিয়োগ করার শুরুতেই তারা বুঝে উঠতে পারেনা কিভাবে বিনিয়োগ করবেন বা পোর্টফলিও কিভাবে সাজাতে হয় এবং ম্যানেজ করতে হয়।  বিনিয়োগকারীদের জন্য কিভাবে পোর্টফলিও সাঁজাতে হয় সে বিষয়ে কিছু কার্যকরি পরামর্শ দিচ্ছিঃ

শেয়ার ব্যবসায়  দুইভাবে লাভ করা সম্ভব।

১. ডিভিডেন্ড,

২. শেয়ারের দাম বৃদ্ধি।

প্রতিবছর কিছু শেয়ার থেকে ভাল ডিভিডেন্ড পেলে আপনার হাতে নগদ টাকা আসবে (শেয়ার বিক্রি না করেই)। এই টাকা আপনি লাভ হিসেবে তুলে নিতে পারেন, খরচ করতে পারেন, আবার নতুন করে বিনিয়োগও করতে পারেন। এই শেয়ারগুলোকে বলা হয় ভ্যালুড শেয়ার (Valued Share)।

অন্যদিকে এমন কিছু শেয়ার আপনার পোর্টফোলিওতে দরকার যার দাম কয়েকগুণ বেড়ে গিয়ে আপনার পোর্টফলিওর চেহারাই পাল্টে দেবে। এই শেয়ার থেকে আপনি তখনই লাভ করবেন যখন শেয়ারটি বিক্রি করার সময় আসবে (অর্থাৎ শেয়ারটি Overpriced হয়ে যাবে)। এই শেয়ারগুলোর নাম গ্রোথ শেয়ার (Growth Share)।

এখন দেখে নেই ভ্যালুড এবং গ্রোথ শেয়ার চেনার সহজ উপায়গুলোঃ

ভ্যালুড শেয়ার খুঁজে বের করার জন্য দেখে নিন কোন কোম্পানিগুলোর PE Ratio কম কিন্তু প্রতিবছর ভাল ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। এখন হিসেবে আনুন Dividend Yield। ফর্মুলাটি খুবই সহজ। মনে করুন একটি কোম্পানি ২০% ডিভিডেন্ড দিয়েছে। শেয়ারটির ফেসভ্যালু ১০ টাকা, এবং মার্কেট প্রাইস ১৫ টাকা।

তাহলে শেয়ারটির Dividend Yield হল (ডিভিডেন্ড % × ফেসভ্যালু) ÷ (মার্কেট প্রাইস × ১০০)= ১৩.৩৩%

অর্থাৎ প্রতিবছর আপনার বিনিয়োগ করা টাকার উপর ১৩.৩৩% হারে লাভ করছেন! (শুধুমাত্র উদাহরন হিসেবে দেখানো হল)।

গ্রোথ শেয়ার চেনার টেকনিকগুলোও অনেক সহজ। গ্রোথ শেয়ার কেনার উদ্দেশ্য হল এর মার্কেট প্রাইস ভবিষ্যতে কয়েকগুণ হবে, আর তা বিক্রি করে আপনি লাভ তুলে নেবেন। শেয়ারের দাম কয়েকগুণ হতে গেলে কোম্পানির ব্যবসার সাইজ এবং নেট প্রফিট এই সবকিছুই কয়েকগুণ হতে হবে।

আসুন দেখে নেই গ্রোথ কোম্পানিগুলো চেনার সহজ কিছু বৈশিষ্ঠ:

১) কোম্পানির ব্যবসা ক্রমবর্ধমান

২) কোম্পানির EPS বর্ধমান

৩) কোম্পানির Net Profit Margin বর্ধমান

৪) কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট ভাল

৫) কোম্পানিটি প্রায় একচেটিয়া ব্যবসা করে (প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেক ভাল)

আপনার পোর্টফলিও সাজানোর সর্বোত্তম উপায় হল এই দুই ধরণের শেয়ার একসাথে সংমিশ্রন করা। এতে করে বিনিয়োগ নিরাপদ রেখেও লাভ করা সম্ভব।