পরিকল্পিত বিনিয়োগে আপনি সহজেই কর রেয়াত পেতে পারেন। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর রেয়াতযোগ্য খাতসমূহে বিনিয়োগে আপনি সহজেই কর রেয়াত পেতে পারেন।
সরকার কর দাতাদের কিছু কিছু বিনিয়োগ এবং দানে উৎসাহিত করার জন্য ঐ সমস্ত বিনিয়োগ এবং দানের উপর ১৫% কর রেয়াত/ কর ছাড় দিয়ে থাকে।
আর এই বিনিয়োগ / দানের পরিমান ১,০০,০০,০০ টাকা অথবা মোট করযোগ্য আয়ের ২০% এই দুই এর মধ্যে যেটি ছোট তার চেয়ে বেশি নয়। এই রেয়াত তার মোট প্রদেয় আয়কর হতে বাদ যাবে।
আপনি আপনার প্রদর্শিত আয়ের কিছু অংশ উক্ত আয়বর্ষে (যেটি ২০%) বিশেষ কিছু খাতে (যেমন- ভবিষ্যত তহবিল, DPS (বাৎসরিক ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত), সঞ্চয়পত্র, জীবন-বীমা ইত্যাদি কিছু খাতে বিনিয়োগ করলে তার ১৫% কররেয়াত সুবিধা পাবেন, মানে সেই পরিমাণ টাকা আপনার ট্যাক্স থেকে বাদ যাবে।
এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, বিনিয়োগকারী বা দানশীল করদাতার মোট বিনিয়োগ ও দানের বিপরীতে ১৫ শতাংশ কর ছাড় মিলবে।
একজন করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্যাবলী নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করতে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়। আয়কর আইন অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত ফরমে বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় যথাযথভাবে হিসাব-নিকাশ করে এমন সুযোগ গ্রহণ করা যাবে।
বিনিয়োগযোগ্য খাতসমূহ
▶️ বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার,
স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ
▶️ যে কোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট
পেনশন স্কিমে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০,০০০ টাকা বিনিয়োগ
▶️ সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ
▶️ জীবন বীমার প্রিমিয়াম
▶️ বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ
দান ও চাঁদা প্রদানের খাতসমূহ
▶️ সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা
▶️ স্বীকৃত ভবিষ্যত তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা
▶️ কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা
▶️ সুপার এ্যানুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা
▶️ জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের
প্রতিষ্ঠানে অনুদান
▶️ যাকাত তহবিলে দান
▶️ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোন দাতব্য
হাসপাতালে দান
▶️ প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান
▶️ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে প্রদত্ত দান
▶️ আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে দান
▶️ আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালে দান
▶️ ICDDR’B তে প্রদত্ত দান
▶️ CRP, সাভার এ প্রদত্ত দান
▶️ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে দান
▶️ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশে দান
▶️ ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে দান
▶️ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানে অনুদান।
কর রেয়াত পেতে ওপরে উল্লেখিত এসব খাতে একজন করদাতা বছরের মোট আয়ের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দান করতে পারবেন।
এর বেশি করলে অতিরিক্ত অংশের কর রেয়াত মিলবে না। ওই বিনিয়োগকারী বা দানশীল করদাতারমোট বিনিয়োগ ও দানের ১৫ শতাংশ কর ছাড় মিলবে।
কর রেয়াত নিতে হলে রিটার্ন ফরমের সঙ্গে ২৪ডি তফসিল ফরম পূরণ করতে হবে।
সেখানে বিনিয়োগ বা দানের বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হবে। ওই ফরমটি পূরণ করে বার্ষিক রিটার্নে সংযুক্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি বিনিয়োগ বা দানের প্রমাণ পত্রও দিতে হবে।