বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো কবে শেয়ার কিনবেন এবং কেমন সময় ব্যবধানে কিনবেন। বিশেষত, সাপ্তাহিক এবং মাসিক ভিত্তিতে শেয়ার কেনার মধ্যে কোনটি বেশি লাভজনক এবং ঝুঁকি কম তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন থাকে। বর্তমান বাজারের গতিপ্রকৃতি এবং বিনিয়োগ কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে, সাপ্তাহিক ও মাসিক শেয়ার কেনার সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরবো।
সাপ্তাহিক শেয়ার কেনার সুবিধা:
- প্রতিদিনের বাজার চাহিদা উপলব্ধি:শেয়ার বাজারের প্রতিদিনের ওঠানামা বুঝতে হলে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে শেয়ার কেনা সুবিধাজনক। কারণ বাজার প্রতিদিন পরিবর্তন হয় এবং বাজারের আপডেট অনুযায়ী শেয়ার কেনার মাধ্যমে আপনি সঠিক সময়ে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
আপনি লেটেস্ট শেয়ার প্রাইস পেজ থেকে দৈনিক মূল্য আপডেট দেখতে পারবেন। - বাজারের ট্রেন্ড মেনে চলা:সাপ্তাহিক শেয়ার কেনা আপনাকে বাজারের ছোট ট্রেন্ডগুলি ধরতে সাহায্য করবে। আপনি যদি বাজারের অস্থিরতাকে কাজে লাগাতে চান এবং দ্রুত মুনাফা করতে চান, তবে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
- লিকুইডিটি এবং দ্রুত লাভ:সাপ্তাহিক বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনি দ্রুত লাভ করতে পারবেন, এবং আপনার বিনিয়োগটি খুব বেশি সময় ধরে ঝুঁকিতে থাকবে না। আপনার শেয়ার বাজারের পর্যালোচনা দেখে কিনতে পারেন।
সাপ্তাহিক শেয়ার কেনার অসুবিধা:
- প্রতিদিনের মনিটরিং:সাপ্তাহিক ভিত্তিতে শেয়ার কিনলে প্রতিদিন বাজার মনিটর করা অত্যন্ত জরুরি। এটা সময়সাপেক্ষ হতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে, কারণ স্বল্পমেয়াদী বাজার ওঠানামায় ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
- উচ্চ ট্রেডিং ফি:বারবার শেয়ার কেনা-বেচার জন্য ট্রেডিং ফি বেশি হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে, বারবার ট্রেড করা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক নাও হতে পারে।
মাসিক শেয়ার কেনার সুবিধা:
- দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ কৌশল:মাসিক ভিত্তিতে শেয়ার কেনা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য সেরা পদ্ধতি হতে পারে। এতে আপনি বড় ধরনের লাভের সুযোগ পাবেন এবং বাজারের সাময়িক ওঠানামায় খুব বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না।
- বাজারের বড় ট্রেন্ড ধরা:মাসিক বিনিয়োগ আপনাকে বাজারের বড় ট্রেন্ড এবং বিনিয়োগের সুযোগ ধরতে সাহায্য করবে। এটি ধৈর্যশীল বিনিয়োগকারীদের জন্য কার্যকর।
- কম ঝুঁকি এবং স্থায়ী মুনাফা:দীর্ঘমেয়াদে শেয়ার ধরে রাখলে বাজারের ওঠানামা খুব বেশি প্রভাব ফেলে না এবং ধৈর্য ধরে বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা কম ঝুঁকি নিতে চান তাদের জন্য মাসিক ভিত্তিতে শেয়ার কেনা ভালো।
মাসিক শেয়ার কেনার অসুবিধা:
- অত্যধিক অস্থিরতা এড়ানোর সুযোগ না পাওয়া:মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করলে বাজারের অস্থিরতার সুযোগ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, আপনি ছোটো ওঠানামায় অংশ নিতে পারবেন না।
- পোর্টফোলিও পরিবর্তন না করার ঝুঁকি:দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে পোর্টফোলিও তেমন পরিবর্তন করা হয় না, যা অনেক সময় নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারের ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।
কোনটি বেশি লাভজনক? সাপ্তাহিক নাকি মাসিক?
বাজারের ট্রেন্ড, বিনিয়োগকারীর কৌশল এবং ঝুঁকির গ্রহণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে সাপ্তাহিক ও মাসিক শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সাপ্তাহিক বিনিয়োগ স্বল্পমেয়াদী মুনাফা অর্জনের জন্য ভাল, কিন্তু বেশি সময় দিতে হবে এবং প্রতিনিয়ত বাজার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অন্যদিকে, মাসিক বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে মুনাফা দিতে পারে এবং ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে।
যারা নতুন বিনিয়োগকারী, তারা সাপ্তাহিক শেয়ার কেনা-বেচার ঝুঁকি এড়িয়ে মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা ভালো। বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে আমাদের সাইটে চোখ রাখুন। আপনি সহজেই আমাদের লগইন বা রেজিস্টার করে বিনিয়োগের বিস্তারিত জানতে পারবেন।