শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করার চর্চা অনেকের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে। অনেক বিনিয়োগকারী মাসিক আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ শেয়ারে বিনিয়োগ করে একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও তৈরি করতে সক্ষম হন। এভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সুবিধা উপভোগ করতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা উচিত কিনা?
মাসিক বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনি বাজারের পরিবর্তনশীলতার প্রভাব থেকে নিজেকে কিছুটা রক্ষা করতে পারেন। নিয়মিত মাসিক বিনিয়োগ করলে আপনি বাজারের ঊর্ধ্বগতিতে যেমন অংশীদার হবেন, তেমনিভাবে নিম্নগতিতেও ক্রয় করতে সক্ষম হবেন। এই পদ্ধতিকে Dollar-Cost Averaging (DCA) বলা হয়, যেখানে আপনি বাজারের সময়ের উপর নির্ভর না করে একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে বিনিয়োগ করেন, যা বাজারের ওঠানামার প্রভাব কমিয়ে দেয়।
আপনার মাসিক বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এর সাম্প্রতিক তথ্য দেখে নেওয়া জরুরি। শেয়ারের সর্বশেষ দাম পৃষ্ঠায় ঢুঁ মারলে আপনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (DSE) সব শেয়ারের সাম্প্রতিক তথ্য পেয়ে যাবেন। এতে আপনার বিনিয়োগের সময় এবং মূল্য নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হবে।
অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ারে মাসিক বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হতে পারে। বাজারের বিভিন্ন মূল্য সূচকের (Market Indices) সাথে খাপ খাওয়াতে মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ করলে বাজারের ওঠানামার চাপও অনেকটা কম অনুভূত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন বাজার নিম্নমুখী থাকে, তখন আপনি সস্তায় শেয়ার কিনতে পারবেন। আর বাজার চড়া থাকলে আপনি সেই বিনিয়োগ থেকে ভালো মুনাফা পেতে পারেন।
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে কয়েকটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ কৌশল রয়েছে, যেমন:
শেয়ারবাজারে মাসিক বিনিয়োগ করার সময় কিছু চ্যালেঞ্জও থাকতে পারে। আপনি যদি সঠিক গবেষণা না করেন এবং মুদ্রাস্ফীতি বা বাজারের ঝুঁকি বিবেচনা না করেন, তবে বিনিয়োগে ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়াও, আপনার বিনিয়োগের পরিকল্পনায় কারেন্সি রিস্ক এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা বিবেচনায় রাখতে হবে।
তবে যদি আপনি বাজারে বিনিয়োগের আগেই সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেন এবং নিয়মিত বাজার বিশ্লেষণ করেন, তাহলে আপনি এই ঝুঁকিগুলো থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকবেন। আমাদের শেয়ার মার্কেট ওভারভিউ পৃষ্ঠা থেকে প্রতিনিয়ত বাজারের সাম্প্রতিক আপডেট ও বিশ্লেষণ পেতে পারেন যা আপনার বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
আপনার মাসিক বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরির জন্য প্রথমেই আপনার আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। আপনি কি ১০ বছরের মধ্যে একটি বড় পোর্টফোলিও তৈরি করতে চান? নাকি আপনি ছোট মুনাফায় সন্তুষ্ট থাকবেন? আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী একটি কার্যকর স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করতে হবে।
একই সাথে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (DSE) ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এর বিভিন্ন উপকরণ সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। এখানে নিয়মিত আপডেটের জন্য আপনি DSE নিউজ পৃষ্ঠা দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার বিনিয়োগের সময় প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের জন্য টেকনিক্যাল চার্ট এর ব্যবহারের বিষয়েও সচেতন থাকুন।
শেয়ারে মাসিক বিনিয়োগ করা সঠিক পরিকল্পনা ও ধৈর্যের সাথে করলে অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। বাজার বিশ্লেষণ, ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস সহ সঠিক স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে মাসিক ভিত্তিতে বিনিয়োগ আপনাকে একটি শক্তিশালী আর্থিক ভবিষ্যৎ গঠনে সাহায্য করবে। বিনিয়োগ করার সময়, আমাদের শেয়ারের সর্বশেষ মূল্য তালিকা এবং বাজারের ওভারভিউ থেকে সর্বশেষ তথ্য নিয়মিত আপডেট করতে ভুলবেন না।