ব্লু চিপ বলতে সাধারণত শেয়ারবাজারের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বুঝায়। এগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত, আর্থিকভাবে সুদৃঢ় প্রতিষ্ঠান যারা ধারাবাহিক কর্মক্ষমতার মাধ্যমে স্থিতিশীল উপার্জন করে আসছে এবং বাজারে তাদের একটি শক্তিশালী উপস্থিতির প্রমাণিত ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। তারা প্রায়শই তাদের নিজ নিজ শিল্প ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এসকল প্রতিষ্ঠান সাধারণত যেকোন পোর্টফোলিওর ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
১. স্থিতিশীলতা - ব্লু চিপ শেয়ারগুলো বাজারের মন্দার সময় আরও স্থিতিস্থাপক হতে থাকে, যা আপনার পোর্টফোলিওতে স্থিতিশীলতা প্রদান করে।
২. লভ্যাংশ আয় - অনেক ব্লু চিপ প্রতিষ্ঠান ধারাবাহিক লভ্যাংশ প্রদান করে, যা বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত আয়ের প্রবাহ প্রদান করে।
৩. দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধি - এই প্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘমেয়াদে মুনাফা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ইতিহাস রয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে যথেষ্ট মূলধন লাভ করতে সাহায্য করে।
৪. বিশ্বাসযোগ্যতা - স্বনামধন্য, সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ আপনার বিনিয়োগের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় এবং ঝুঁকি কমায়।
৫. তারল্য - ব্লু চিপ শেয়ারগুলো প্রায়শই উচ্চ লেনদেন হয়, যা ক্রয়-বিক্রয়ের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করে।
১. সীমিত স্বল্প-মেয়াদী লাভ - ব্লু চিপ শেয়ারগুলোর দ্রুত দরের পরিবর্তন হয়না, যা স্বল্পমেয়াদী লাভের সম্ভাবনা সীমিত করে।
২. বাজার নির্ভরতা - বাজারে মন্দা বা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এইসকল প্রতিষ্ঠান প্রভাবিত হতে পারে। কিন্তু যেকোনো ছোট প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এসকল বৃহৎ প্রতিষ্ঠান সহজেই সেসকল প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে।
৩. কম ঝুঁকি, কম রিটার্ন - যদিও এই বিনিয়োগগুলো স্থিতিশীল, তবে তারা উচ্চ-ঝুঁকি সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম মুনাফা দিতে পারে।
কোনো প্রতিষ্ঠানকে ব্লু চিপ হিসেবে নির্ণয় করতে সেই প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য জানা প্রয়োজন যা আপনি "বিনিয়োগ"-এর মাধ্যমে পাবেন। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্যের জন্য সেই প্রতিষ্ঠানের পেইজে আসুন - https://biniyog.com.bd/company/tradingcode (স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের tradingcode লিখুন।) এর পর নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করুন -
১. আর্থিক কর্মক্ষমতা - কোম্পানি বিবরণ সেকশন থেকে আর্থিক কর্মক্ষমতা দেখুন। বেশ কয়েক বছর ধরে সামঞ্জস্যপূর্ণ আয়, মুনাফা বৃদ্ধি এবং বিশাল মূলধন ব্লু চিপ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম নির্ণায়ক।
২. বাজারে নেতৃত্ব প্রদান - সংবাদ সেকশন থেকে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংবাদ বা মূল্যায়ন পড়ুন। এ থেকে নির্ণয় করা যাবে যে সেই প্রতিষ্ঠান বাজারে বা তার বাণিজ্য ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করে কিনা।
৩. লভ্যাংশের ইতিহাস - কোম্পানি বিবরণ সেকশন থেকে লভ্যাংশের ইতিহাস দেখুন। বিবেচনা করুন যে প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ লভ্যাংশ প্রদানের ইতিহাস আছে কিনা যা প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা প্রকাশ করে।
৪. ব্যালেন্স শীট - কোম্পানি বিবরণ এবং ডাউনলোড সেকশনের আর্থিক প্রস্তাবনা থেকে নিম্ন ঋণের মাত্রা এবং স্বাস্থ্যকর আর্থিক অনুপাত পরীক্ষা করুন।
৫. দীর্ঘ ব্যবসায়িক পথচলা - ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি ইতিহাস প্রতিষ্ঠানের নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করে। কোম্পানি বিবরণ এবং সংবাদ থেকে সেই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস সম্পর্কে জানুন।
এছাড়াও, বিনিয়োগ-এর স্ক্রিনার ব্যবহার করে আপনি নির্দিষ্ট মানদন্ডের ওপর ভিত্তি করে শেয়ার ফিল্টার করতে পারবেন যা আপনাকে সহজেই ব্লু চিপ প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।
ব্লু চিপ বিনিয়োগ আপনার পোর্টফোলিওর জন্য একটি শক্ত ভিত্তি হিসাবে কাজ করে, ঝুঁকি হ্রাস করে এবং আপনার মূলধন সংরক্ষণ করে। এসকল প্রতিষ্ঠান বাজারে নিরাপত্তার অনুভূতি প্রদান করে এবং নির্ভরযোগ্য আয়ের ধারা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে অবসর গ্রহণের সময়।
ব্লু চিপ শেয়ারগুলোতে বরাদ্দকৃত বিনিয়োগ আপনার মোট বিনিয়োগের কতো শতাংশ হবে সেটা আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য, ঝুঁকি সহনশীলতা এবং সামগ্রিক কৌশলের উপর নির্ভর করে। একটি সাধারণ পদ্ধতি হল ব্লু চিপ বিনিয়োগে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ (যেমন, ৬০-৭০%) বরাদ্ধ করা, এবং বাকি অংশকে অন্যান্য শেয়ার, বন্ড এবং সম্ভাব্য উচ্চতর রিটার্নের জন্য অন্যান্য সম্পদে বিনিয়োগ করা।
ব্লু চিপ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ যাত্রা শুরু করতে প্রস্তুত? "বিনিয়োগ" বাজার এবং প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবে যা আপনাকে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। সুতরাং, আজই আপনার আর্থিক ভবিষ্যৎ নির্মাণ শুরু করুন!