পরিবার সঞ্চয়পত্র কি এবং কিভাবে কিনবেন?

পরিবার সঞ্চয়পত্র হলো ৫ বছরের একটি সঞ্চয় প্রকল্প বা ডিপোজিট যা পারিবারিক সঞ্চয়পত্র নামেও পরিচিত। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। ১৮ বছরের উর্ধ্বে যেকোনো মহিলা এই সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন। 

এই সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৪৫ লক্ষ পর্যন্ত মূল্যমানের ক্রয় করা যায়। পরিবার সঞ্চয়পত্রে পাঁচ বছরের মধ্যে একেক বছরে একেক হারে সুদ পাওয়া যায়।  এই সঞ্চয়পত্রের মেয়াদান্তে মুনাফার হার ১১.৫২%। 

পরিবার সঞ্চয়পত্র কোথায় পাওয়া যাবে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা অফিস , বাণিজ্যিক ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতাধীন ৭১ টি সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং সারাদেশে সকল ডাকঘরে পরিবার সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। 

পরিবার সঞ্চয়পত্র কারা ক্রয় করতে পারবেন? 

১৮ বা তার বেশি বয়সী যেকোনো বাংলাদেশী মহিলা, যেকোনো বাংলাদেশী শারীরিক প্রতিবন্ধী (নারী-পুরুষ) এবং ৬৫ বা তার বেশি বয়সী যেকোনো নারী ও পুরুষ শুধু একক নামে পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। 

পরিবার সঞ্চয়পত্রের উল্লেখযোগ্য আরো বিষয়াদি:

▶️ পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা প্রতি মাসে দেয়া হয়। 

▶️ এই সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে নমীনি নিয়োগ করা যায়।

▶️ কোনো কারণে সঞ্চয়পত্র পুড়ে গেলে, হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে ইস্যু অফিসে গিয়ে ডুপ্লিকেট সঞ্চয়পত্র ইস্যু করা যায়। 

▶️ সঞ্চয়পত্র যেকোনো স্থানে স্থানান্তর করা যায়।  

▶️ সঞ্চয়পত্র কোনো ব্যাংক ঋণের জন্য আমানত বা জামানত হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। 

▶️ ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও সঞ্চয়পত্র জামানত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

পরিবার সঞ্চয়পত্র কিভাবে করবেন? 

সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের জন্য পরিবার  একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। সর্বাধিক মুনাফার দিক থেকে এটি একটি খুবই লাভজনক বিনিয়োগ মাধ্যম।

পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য গ্রাহককে আগে এর একটি আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরম ইস্যু অফিস হতে সংগ্রহ করা যায় অথবা অনলাইন থেকেও ডাউনলোড করা যায়। আবেদন ফরমের সাথে আরো কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। পরিবার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র দরকার হয়:- 

▶️ গ্রাহকের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি ও নমিনীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের (গ্রাহক কর্তৃক সত্যায়িত) ছবি।

▶️ গ্রাহক ও নমীনির জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি।আর নমীনি নাবালক হলে তার জন্মনিবন্ধনের সনদের ফটোকপি দিতে হবে।

▶️ গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র ও চেক এর কপি।

▶️ গ্রাহক যেই অ্যাকাউন্টে তার মুনাফা ও আসলের টাকা জমা রাখবেন তার হিসাব নম্বর দিতে হবে। 

▶️ গ্রাহকের ই-টিন সার্টিফিকেটের কপি লাগবে তবে এটা শুধু মাত্র দুই লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 

▶️ যেই চেকের মাধ্যমে টাকা দিবেন সেটি ও তার ফটোকপি। 

▶️ আয়কর রিটার্ন দাখিলের রশিদ ( পাঁচ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে) । 

উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী সব কাগজপত্র ও সঞ্চয়পত্রের আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করে ইস্যু অফিসে জমা দিতে হবে এবং সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করা যাবে।