বিনিয়োগ কি?

ভবিষ্যতে মূল্য বৃদ্ধি পাবে এমন আশায় নিজ অর্থ কোনো কিছুতে খাটানোকে বিনিয়োগ বলে। তবে দয়া করে বিনিয়োগকে সঞ্চয়ের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না। সঞ্চয় হলো বিনিয়োগের পূর্ব শর্ত মাত্র। কিন্তু বিনিয়োগ হচ্ছে সম্পদ সুরক্ষিত ও বৃদ্ধি করার কৌশল। বিনিয়োগের বিভিন্ন উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে- যৌথ পুঁজি, বন্ড, স্টক, ফিক্সড ডিপোজিট, স্পিন-অফ, ডিমার্জার ইত্যাদি।  

 

অন্যদিকে, বিনিয়োগকে অধিক রাজস্ব উৎপন্ন করার একটি প্রক্রিয়া হিসেবেও দেখা যায়। তবে প্রক্রিয়াটি হতে হবে কোনো সংস্থা বা সরকারের মালিকানায়। বিনিয়োগের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো- এটি আর্থিক সংস্থাগুলোকে অধিক উৎপাদনশীল ব্যবহারের জন্য সম্পদ পুনঃবন্টনকে সহজ করে। এছাড়া এটি ঋণ হ্রাসের মাধ্যমে কোনো কর্পোরেট পুনর্গঠনেরও সহায়ক।

 

ল্যাটিন শব্দ ‘ইনভারসিও’ থেকে ইংরেজি Investment শব্দের উৎপত্তি যাকে বাংলায় আমরা বিনিয়োগ বলি। 

বিনিয়োগ কি - এটা বুঝতে হলে আপনাকে জানতে হবে এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ, এর লক্ষ্য কি, এর প্রকারভেদ এবং মাধ্যমগুলো। চলুন জেনে নেই! 

 

বিনিয়োগের মাধ্যম

 

শুরু করি বিনিয়োগের মাধ্যম দিয়ে। এগুলো হচ্ছে - 

  • শেয়ার বাজার 
  • জমি বা বসতভিটায় বিনিয়োগ
  • ব্যবসায় বিনিয়োগ 

 

আপনি কি জানেন কেন বিনিয়োগ এত বেশি গুরুত্বের দাবিদার?  

 

বিনিয়োগ এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ  হবার কারণগুলো হচ্ছে এটি - 

  • সম্পদ তৈরি করে 
  • আর্থিকভাবে সুরক্ষিত রাখে  
  • মুদ্রাস্ফীতি হতে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচায় 

 

বিনিয়োগের লক্ষ্য

 

আসলে বিনিয়োগকে তার লক্ষ্য দিয়েও চিনে নেয়া যায়। এর প্রাথমিক লক্ষ্য হলো একটি সংস্থার সর্বাধিক রিটার্ন নিশ্চিত করা। বিভিন্ন কারণে বিনিয়োগ অপরিহার্য হয়ে ওঠে যেমন - 

  • উচ্চ ঋণ খরচ
  • অনুপযুক্ত ক্ষমতা
  • তারল্য সমস্যা
  • রাজনৈতিক বিবেচনা

 

ধরুন, আপনাদের একটি কোম্পানি রয়েছে যেটি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত এবং সবগুলো অংশ কোম্পানির সামগ্রিক কৌশলের সাথে সম্পূর্ণভাবে সংযুক্ত নয়। অনেক সময় পলিসি বা নীতিগত পরিবর্তন একটি কর্পোরেশানকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। 

 

এখন মনে করুন, এর একটি অংশ কোনো কারণে আর্থিকভাবে ভালো করছে না। তখন করণীয় কি? 

 

এমন অবস্থায় বুদ্ধিমানের কাজ হলো - কোম্পানীর ঐ অংশটি অন্য বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করা। এভাবেই সেই ব্যবসায়ের প্রসার নিশ্চিত করা যায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে সরকারী আইন বলে নির্দিষ্ট এন্টারপ্রাইজ থেকে বিনিয়োগ আবশ্যিক করা যায়। 

 

বিনিয়োগের শ্রেণীবিভাগ  

 

বিনিয়োগ প্রধানত দুই প্রকারের- 

 

১. ঐতিহ্যগত বা প্রথাগত বিনিয়োগ এবং 

২. বিকল্প বিনিয়োগ 

 

১. ঐতিহ্যগত বা প্রথাগত বিনিয়োগ:

এই বিনিয়োগটি সম্পন্ন হয় বন্ড, ফান্ড, শেয়ার এসবের মাধ্যমে। বিনিয়োগ হিসেবে এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়। এর প্রকারভেদগুলো নিম্নরুপ-  

  • স্টক
  • মিউচুয়াল ফান্ড 
  • বন্ড 
  • ইক্যুইটি ফান্ড
  • হাইব্রিড ফান্ড/ব্যালান্সড ফান্ড 
  • স্থায়ী আমানত

 

২. বিকল্প বিনিয়োগ:

নির্দিষ্ট আয়ের মূলধারায় পড়ে না এমন বিনিয়োগকে বিকল্প বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয়। যেমন - 

  • স্বর্ণ
  • রিয়েল এস্টেট 
  • হেজ ফান্ড
  • কাঠামোগত/স্ট্রাকচার্ড পণ্য 
  • ভেঞ্চার ক্যাপিটাল/প্রাইভেট ইক্যুইটি
  • ডেরিভেটিভস 

 

আশা করি, বিনিয়োগের ব্যাপারে সব মিলিয়ে এবার একাটি স্বচ্ছ ধারণা পেয়েছেন। ভালো থাকবেন! পোস্টটি পড়ার জন্য শুকরিয়া। 

বিনিয়োগ কি?

No items found.