হোল্ডিং ট্যাক্স কি? কিভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স যাচাই করবেন?

আশা করি ভালো আছেন। প্রিয় পাঠক, আপনি একদম যুতসই পেজে এসে পড়েছেন। এখানে আমরা শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স কি সেটাই জানবো না, কি কি উপায়ে এই ট্যাক্স যাচাই করা যায় তার সঠিক পথটি বাতলে দেবো।

হোল্ডিং ট্যাক্স কি?

হোল্ডিং ট্যাক্স হচ্ছে একধরনের কর যা স্থানীয় সরকারকে প্রদান করা হয়। এটি মালিকানাধীন ঘরবাড়ি বা ভবনের উপর দিতে হয়।

অন্যভাবে বলতে গেলে, হোল্ডিং ট্যাক্স হল ঘর বাড়ির উপর নির্ধারিত একটি মূল্য যা বার্ষিক কর হিসেবে নিজ এলাকার পৌরসভা বা পৌর করপোরেশনকে প্রদান করা হয়। এটি এলাকার মৌলিক অবকাঠামগত উন্নয়ন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পয়ঃনিষ্কাশন, আলো ও অন্যান্য রক্ষনাবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। হোল্ডিং ট্যাক্স রাজস্ব আয়ের একটি উৎস।  

হোল্ডিং ট্যাক্স হার বাড়ি বা ভবনের অবস্থান, আকার, ধরন, মালিকের বয়স, পেশা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য ভিন্ন হতে পারে।

হোল্ডিং ট্যাক্স যাচাইয়ের পদ্ধতি  

সচরাচর গ্রামাঞ্চলে ইউনিয়ন পরিষদ এবং শহরে সিটি এই ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকে। বার্ষিক কত শতাংশ কর দিতে হবে তা মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে কর নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য্য করার পদ্ধতিকে মূল্যায়ন বলে। মূল্যায়ন অংক বের না করে হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করা যায় না। মূল্যায়নের অঙ্কের ওপর ১২ % হারে বাষিক কর ধার্য করা হয়। ১২ % করের মধ্যে ৭% হোল্ডিং কর, ২ % পরিচ্ছন্ন কর ও ৩ % বাতি কর।

যেমন ধরুন আপনার মিরপুর-১০ এ মেইন রোডের পাশে একটি ১০০০ বর্গফুটের আবাসিক ফ্ল্যাট রয়েছে। এখানে প্রতি বর্গফুটের জন্য মাসিক ৬.৫০ হারে পাকা বাড়ির ট্যাক্স দিতে হবে। তাহলে ৬.৫০ হলে ১০০০ বর্গফুটে আসে ৬৫০০ টাকা। এর সঙ্গে ১০ মাস (১২ মাস থেকে ২ মাস বাদ দিতে হবে) গুণ করলে আসবে ৬৫০০০ টাকা।

এবার ৬৫০০০ টাকাকে ১২ দিয়ে ভাগ করতে হবে। তাহলে আসবে ৫৪১৬.৬৭ টাকা করে। যেহেতু তিন মাস পর পর কর দিতে হয় সেহেতু ৫৪১৬.৬৭ টাকাকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে ১৩৫৪.১৬ টাকা আসে। অর্থাৎ তিন মাস পর পর আপনাকে ১৩৫৪.১৬ টাকা কর দিতে হবে।

হোল্ডিং নম্বর সংগ্রহ

সাধারণত সব বাড়িতেই হোল্ডিং নম্বর দেয়া থাকে। তবে নতুন জায়গা কেনা বা বাড়ি করার সময় রাজস্ব বিভাগে আবেদনের মাধ্যমে এটি সংগ্রহ করতে হয়। এক্ষেত্রে কর কর্মকর্তা বরাবর জায়গার মালিককে মালিকানা সংক্রান্ত কাগজ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র সহ আবেদন করতে হয়। যাচাইয়ের মাধ্যমে তা সঠিক মনে হলে তাকে হোল্ডিং নম্বর প্রদান করা হয়।

 

হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান

বর্তমানে অনলাইন এবং অফলাইন দুই মাধ্যমেই হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করা যায়। ঘরে বসেই বিকাশ বা রকেট থেকে খুব সহজে এই ট্যাক্স দেয়া সম্ভব। কেউ চাইলে ব্যাংকে গিয়েও হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আসতে পারবে।

শেষ কথা  

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং স্থানীয় সরকার হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করতে নিজ নিজ স্থান থেকে সকলের উচিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করা। স্থানীয় সরকারকে কার্যকর ও স্বনির্ভর করার জন্য এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।